
প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারনায় মুখরিত আমঝুপি বিএডিসি ফার্ম
আনমনা চোখে দূর থেকে দেখলে মনে হয় বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কাছে গেলেই চোখে পড়ে হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুলের হাসি। ফুলগুলো বাতাসে দোল খেয়ে যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। মৌমাছিরা দলবেঁধে এক ফুল থেকে অন্য ফুলের মধু আহরণে ব্যস্ত। পাখির কিচিরমিচির কলতানে মুখরিত চারিপাশ। দিনভর সূর্যমুখী বাগানে ভিড় করছে এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা শত শত মানুষ। কেউ ছবি তুলছে, আবার কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে বাগানে এসে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
সূর্যমুখী ফুলের মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্যটি দেখা মেলে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপী বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) খামারে। এ খামারের বিশাল এলাকাজুড়ে রোপন করা হয়েছে কয়েক হাজার সূর্যমুখী ফুলের বীজ। বর্তমানে বীজ থেকে প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে। যা দেখতে দুর-দূরান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসছেন। দুপুরের পর থেকেই সূর্যমুখী বাগানে নানা বয়সী মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
সূর্যমুখী ফুলের এ বাগানটি এখন প্রকৃতিপ্রেমীদের একমাত্র দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে শত শত মানুষের ভিড়ে বাগানটির রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের। বাগানের কিছুটা ক্ষতি হলেও প্রকৃতিপ্রেমীদের কথা চিন্তা করে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ আগতদের তেমন কিছুই বলছেন না।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর আমঝুপী ডাল ও তৈল ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারের উপ পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এখানে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো ডাল ও তৈল জাতীয় শস্য বীজ উৎপাদন করা। তারই ধারাবাহিকতায় এবছর আমরা ছয় একর জমিতে বারী সূর্যমুখী বীজ উৎপাদন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। সূর্যমুখী একটি লাভজনক শস্য। সূর্যমুখী আবাদটা আমাদের দেশে জনপ্রিয় করার অতীব জরুরি। কারণ আমাদের দেশের জনসাধারণ সয়াবিন তেলের উপর নির্ভরশীল ফলে বিভিন্ন রকম হার্টের রোগ সহ নানা রকম রোগবালাইয়ে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। আমাদের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। আমরা যদি সয়াবিন তেল থেকে সরে এসে সূর্যমুখীর তেল পারি তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং পুষ্টিমান নিশ্চিত হবে তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টির মান নিশ্চিত হবে।
তিনি আরও বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নিয়েছে সরিষা সূর্যমুখী এগুলোর আবার বাড়ানো যায়। সে আবার বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বীজ উৎপাদন করে থাকি। সেই আবাদ বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বীজ উৎপাদন করে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় এবছর বারি সূর্যমুখীর বীজ উৎপাদন করেছি। আশারাখি ফলন ভালো হবে এবং এ বীজ দিয়ে পরবর্তীতে কৃষকপর্যায়ে আরও অধিকতর জমি সূর্যমুখী চাষের আওতায় আনা যাবে। এর ফলে সূর্যমুখীর চাষ আমাদের দেশে ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হবে এবং ভজ্যতেল সয়াবিনের জায়গা অনেকটাই দখল করতে পারবে। এটাই মূলত আমাদের উদ্দেশ্য।